Skip to Content

গুলিস্থানের রাত (আবহ তৈরি করে)

December 24, 2025 by
MAZHARUL ISLAM
| No comments yet

গল্পের শিরোনাম: গুলিস্থানের মোড়

​ঢাকার ব্যস্ততা যদি কোথাও থমকে দাঁড়িয়ে আবার দ্বিগুণ বেগে ছুটতে শুরু করে, তবে সেই জায়গাটির নাম গুলিস্থান। গ্রাম থেকে আসা নতুন যুবক কিংবা শহরের ঝানু ব্যবসায়ী—সবার কাছেই গুলিস্থান এক গোলকধাঁধা।

​গল্পের শুরু

​সালাম সাহেব আজ বহু বছর পর গুলিস্থানে এসেছেন। হাতে একটা পুরনো চিরকুট, সেখানে তার এক পুরনো বন্ধুর ঠিকানা লেখা। কিন্তু জিরো পয়েন্টে পা রাখতেই তার মাথা ঘুরে গেল। চারদিকে মানুষের সমুদ্র, বাসের তীব্র হর্ন আর হকারদের বিচিত্র হাঁকডাক।

​একদিকে 'দশ টাকা, দশ টাকা' বলে চিৎকার করছে গেঞ্জি বিক্রেতারা, অন্যদিকে সুগন্ধি আতর আর ফুটপাতের বইয়ের স্তূপ। সালাম সাহেব অবাক হয়ে ভাবলেন, এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেও কী এক অদ্ভুত ছন্দ আছে!

​সেই চেনা গলি

​স্মৃতি হাতড়ে তিনি কাপ্তান বাজারের ভেতরের গলিটায় ঢুকলেন। যেখানে পুরনো দিনের গ্রামোফোন থেকে শুরু করে লেটেস্ট স্মার্টফোন—সবই পাওয়া যায়। হাঁটতে হাঁটতে তিনি থমকে দাঁড়ালেন একটি পুরনো চশমার দোকানের সামনে। ঠিক এই দোকানটিতেই বিশ বছর আগে তিনি আর তার বন্ধু মজিদ বসে চা খেয়েছিলেন।

​দোকানের ঝাপ অর্ধেক নামানো। সালাম সাহেব উঁকি দিতেই দেখলেন, ভেতরে এক বৃদ্ধ চশমার ফ্রেম ঠিক করছেন।

"মজিদ?" সালাম সাহেবের কণ্ঠ কিছুটা কাঁপা।

বৃদ্ধ চশমা নামিয়ে তাকালেন। মুহূর্তের জন্য সময় যেন থেমে গেল গুলিস্থানের সব শোরগোলের মাঝেও।

​মিলনের সুর

​মজিদ সাহেব চশমাটা টেবিলের ওপর রেখে উঠে দাঁড়ালেন। দুই বন্ধুর আলিঙ্গনে গুলিস্থানের ধুলোবালি আর কোলাহল যেন মিলিয়ে গেল। মজিদ সাহেব হেসে বললেন, "শহর বদলে গেছে সালাম, জিপিও মোড় থেকে পাতাল রেল হয়েছে, কত নতুন দালান উঠেছে। কিন্তু আমাদের গুলিস্থান আজও সেই আগের মতোই মানুষের ভিড়ে জীবন্ত।"

​উপসংহার

​সন্ধ্যা নামতেই গুলিস্থানের মোড় ঝলমল করে উঠল ল্যাম্পপোস্টের আলোয়। সালাম সাহেব বিদায় নিয়ে বাসে উঠলেন। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে তিনি ভাবলেন, গুলিস্থান আসলে কেবল একটা জায়গা নয়; এটা হাজারো মানুষের স্বপ্ন, আবেগ আর টিকে থাকার লড়াইয়ের এক মহাকাব্য।

Sign in to leave a comment
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম: ইতিহাস থেকে স্থাপত্যের বিস্ময়